News Link: https://dailylalsobujbd.com/news/pg
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির চুক্তির জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পরিকল্পনাকে ‘আংশিক’ হিসেবে বিবেচনা করেছেন। একজন সরকারি মুখপাত্র সোমবার এ কথা বলেছেন।
নেতানিয়াহুকে উদ্ধৃত করে সরকারের মুখপাত্র ডেভিড মেনসার বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন যে রূপরেখা পেশ করেছেন তা আংশিক।’ সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, ‘জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে যুদ্ধ বন্ধ করা হবে।
তারপর হামাসকে নির্মূল করার ইসরায়েলের লক্ষ্য কিভাবে অর্জন করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হবে।
এর আগে বাইডেন শুক্রবার পরিকল্পনাটি উপস্থাপন করেন। তিন পর্যায়ের ওই পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত যুদ্ধের অবসান ঘটাবে, ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের হাতে বন্দি সমস্ত জিম্মি মুক্ত করবে এবং হামাসকে ক্ষমতায় না রেখে বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার পুনর্গঠনের দিকে নিয়ে যাবে।
নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে জারি করা একটি পৃথক বিবৃতি অনুসারে, সংসদের একটি কমিটিকে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের শর্ত পূরণ না করে আমরা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছি—এমন দাবি ভুল।
এদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর উগ্র ডানপন্থী জোটের অংশীদার, দলের নেতা জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গভির এবং অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিস সোমবার সর্বশেষ পরিকল্পনার নিন্দা করেছেন। বেন গভির বলেছেন, বাইডেনের প্রস্তাবের অর্থ হবে ‘মন্ত্রিসভা স্পষ্টভাবে যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে তা অর্জন না করেই যুদ্ধের সমাপ্তি : হামাসের ধ্বংস’।
তিনি আরো বলেছেন, যদি নেতানিয়াহু ‘একটি দায়িত্বজ্ঞানহীন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন’, তার দল ‘সরকার ভেঙে দেবে’।
অন্যদিকে স্মোট্রিস বলেছেন, ‘যদি সরকার এই আত্মসমর্পণের প্রস্তাব গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা এর অংশ হব না এবং আমরা ব্যর্থ নেতৃত্বের পরিবর্তে নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে কাজ করব।
তবে বিরোধীদলীয় নেতা ও মধ্যপন্থী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইয়ার ল্যাপিড বলেছেন, সরকার ‘বাইডেনের গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা উপেক্ষা করতে পারে না।’ তিনি নেতানিয়াহুকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যদি নেতানিয়াহুর ডানপন্থী জোটের অংশীদাররা পদত্যাগ করেন।
৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাস নজিরবিহীন হামলা চালালে গাজা যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। ইসরায়েলের সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, সেই হামলায় এক হাজার ১৯০ জন নিহত হয়েছিল, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক। পাশাপাশি যোদ্ধারা প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়, যাদের মধ্যে ১২০ জন এখনো গাজায় রয়ে গেছে।
এ ছাড়া এদের মধ্যে ৩৭ জন মারা গেছে বলে সেনাবাহিনী বলছে। অন্যদিকে হামাস শাসিত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ ও স্থল আক্রমণে গাজায় প্রায় সাড়ে ৩৬ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক।
মার্কিন, মিসরীয় ও কাতারি মধ্যস্থতা প্রচেষ্টা নভেম্বরে এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির পর থেকে স্থবির হয়ে পড়ে। সেই যুদ্ধবিরতিতে ইসরায়েলি কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে কয়েক ডজন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক সহায়তা বিতরণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে লেবাননে হামাসের মিত্র হিজবুল্লাহ গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলের সঙ্গে নিয়মিত আন্তঃসীমান্ত সংঘর্ষে জড়াচ্ছে। সোমবার স্মোট্রিস বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর উচিত লেবাননে আক্রমণ করা এবং সীমান্ত এলাকা থেকে ‘লাখ লাখ লেবানিজ’কে দূরে সরিয়ে দেওয়া।