News Link: https://dailylalsobujbd.com/news/34F
এসেছে ভাদ্র মাস, যা বাঙালির জীবনে সৌন্দর্যের ঋতু শরতের আগমন বার্তা নিয়ে এসেছে। খ্রিষ্টীয় পঞ্জিকা অনুসারে, এই ঋতু আগস্ট মাসের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত স্থায়ী হয়। শরৎ মানেই শুভ্রতা। এই ঋতুতে দেখা মেলে সাদা কাশফুলের, মন মাতানো শিউলি ফুলের, স্নিগ্ধ জ্যোৎস্নার এবং আলো-ছায়ার মায়াময় খেলার। শরতের আকাশের মতো এমন গভীর নীল আর কোনো ঋতুতে দেখা যায় না।
আষাঢ় ও শ্রাবণের বৃষ্টিমুখর দিনগুলো শেষ হওয়ার পর শরতের শুরু হয়। এসময় প্রকৃতি সজীব ও শুভ্র হয়ে ওঠে। বাতাসের তালে তালে কাশবন দুলে ওঠে, আর এই মন মুগ্ধ করা সৌন্দর্যের জন্য শরৎকে ঋতুরানি বলা হয়। অনেক কবি-সাহিত্যিক শরৎকে নিয়ে সাহিত্য রচনা করেছেন।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার লেখায় শরতের এই শুভ্র রূপকে তুলে ধরেছেন, যেখানে তিনি বলেছেন, ‘আমরা বেঁধেছি কাশের গুচ্ছ, আমরা গেঁথেছি শেফালিমালা—নবীন ধানের মঞ্জরি দিয়ে সাজিয়ে এনেছি ডালা।’
কবি বিনয় মজুমদার তার কবিতায় শরতের দ্বিপ্রহরের কথা উল্লেখ করেছেন, যেখানে সাদা মেঘ উড়ে যায়। শরৎ কালের অন্যতম আকর্ষণ হলো শিউলি ফুল, যা রাতে ফোটে এবং সকালে ঝরে যায়, কিন্তু এর ঘ্রাণ সারা দিন থেকে যায়। কবি কাজী নজরুল ইসলাম এই শিউলি বিছানো পথে পথিককে আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়াও, শরৎ মানে গাছে গাছে পাকা তাল, যা দিয়ে পিঠা ও পায়েস তৈরি হয়। এ সময়েই আমন ধানের চারা বেড়ে ওঠে। শরতের রাতে জ্যোৎস্নার বিমোহিত রূপ মনকে শান্তি দেয়।
শরতের দ্বিতীয় মাস, আশ্বিনে, সন্ধ্যা তাড়াতাড়ি নেমে আসে এবং বাতাসে হালকা শীতলতার ছোঁয়া থাকে। এই শীতলতা যেন ধীরে ধীরে শীতের আগমনের ইঙ্গিত দেয়, আর দূর থেকে হেমন্তের পদধ্বনি শোনা যায়। শরৎকালেই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব, শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়, যা চারদিকে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করে।