চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড থানায় চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ ফাতেমা আক্তারকে আগুন দিয়ে হত্যা মামলার মূল পলাতক আসামী ঘাতক স্বামী মোঃ মোছলেম উদ্দিন (৩২)-কে ফরিদপুর জেলার কোতোয়ালী থানা এলাকা থেকে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এবং র্যাব-১০, ঢাকা’র যৌথ অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে শুক্রবার (২৫ জুলাই) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
নিহত গৃহবধূ চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ থানাধীন দক্ষিণ সোনাপাহাড় গ্রামের বাসিন্দা। প্রায় ১২ বছর পূর্বে মোছলেম উদ্দিনের সাথে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক পারিবারিকভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তবে বিবাহ পরবর্তী সময় থেকেই স্বামী মোছলেম উদ্দিন ভিকটিমের ওপর যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন।
অভিযোগ উঠেছে- গত ১৪ জুন ২০২৫, স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা সিএনজি কিনতে ভিকটিমের পরিবার থেকে টাকা দাবি করলে, ভিকটিম টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মোছলেম উদ্দিনসহ অন্যরা ভিকটিমকে বসতঘরের একটি কক্ষে আটকে রেখে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। আশপাশের লোকজন ভিকটিমকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন, তবে ৫৫ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ভিকটিমের পিতা মোঃ নুরুল আফচার বাদী হয়ে সীতাকুন্ড থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ১১(ক)/৩০ ধারায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-২১, তাং-২১/০৬/২০২৫)। মামলায় ২ জনকে এজাহারনামীয় এবং আরও ২-৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়।
নৃশংস এ হত্যাকাণ্ড এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয়রা মানববন্ধনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার করে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।
র্যাব-৭ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায় যে- গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব জানতে পারে, মোছলেম উদ্দিন ফরিদপুর জেলার কোতোয়ালী থানার জোয়াইড় মোড় এলাকায় অবস্থান করছে। এরপর ২৪ জুলাই ২০২৫ ইং, দুপুর আনুমানিক ২টা ৪৫ মিনিটে (১৪৪৫ ঘটিকায়) র্যাব-৭ এবং র্যাব-১০ এর যৌথ দল অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত মোছলেম উদ্দিনকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
র্যাবের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়েছে, এই ধরনের নৃশংস অপরাধে জড়িতদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না এবং ভবিষ্যতেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।