ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন—এই প্রেক্ষাপটে সম্ভাব্য সহিংসতা রোধে প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কোর কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
বৈঠকে আরও ঠিক হয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসে উৎসবমুখর ও উৎসাহী জনসমাগম শুরু হওয়ার আগেই, এবং নির্বাচনের ঠিক আগে—মোট দুইটি যৌথ মহড়া (ট্র্যাফিক, নির্বাচন কেন্দ্র, জেলা প্রশাসন ও বাহিনীগুলোর অংশগ্রহণে) অনুষ্ঠিত হবে। উদ্দেশ্য: সহিংসতার জন্য দ্রুত, সমন্বিত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ যোগ্যতা যাচাই করা।
এক উপদেষ্টা বৈঠকে বলেন, “নির্বাচনে সহিংসতা হবে, এটা ধরে রেখে প্রস্তুতি নিতে হবে।” তিনি আরও যোগ করেন, “কোনো কেন্দ্র থেকে সহিংসতা শুরু হলে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারলে উৎসাহ দমন সম্ভব হবে।”
এই সিদ্ধান্ত জাতীয় নিরাপত্তা ও নির্বাচন পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রাখতে বিশ্লেষকরা ইতিবাচকভাবে দেখছেন। যদিও নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা না করলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো তাদের প্রস্তুতি, প্রশিক্ষণ এবং অপারেশনাল সমন্বয় চালিয়ে যাচ্ছে নির্দেশ মোতাবেক।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মহড়া শুরুর আগে বাহিনী এবং প্রশাসনের কর্মশালা হলে দায়–দায়িত্বের শৃঙ্খলা ও কমিউনিকেশনসিস্টেম দৃঢ় হবে, যা কেন্দ্রীয় সহিংসতায় দ্রুত প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।
পটভূমি ও বিশ্লেষণ:
যৌথ মহড়ার প্রয়োজনীয়তাঃ
২০১৪ ও ২০১৮ সালে নির্বাচনের সময় কেন্দ্রে সহিংসতা এবং আইনশৃঙ্খলাহীনতা দেখা যায়; সে সময় সমন্বয়ের অভাব তাত্ক্ষণিক পদক্ষেপে বিলম্ব ঘটিয়েছিল। এজন্য আগেভাগে মহড়ায় প্রস্তুত হওয়া জরুরি ।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মনোভাবে পরিবর্তনঃ
কোর কমিটির সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, “পুলিশ এখন মানবিক ও সক্রিয়, আগের মতো চাপ প্রয়োগ করছে না, হয়ত তাই মানুষ ধরে ফেলছে সতর্ক নয়”। মানসম্পন্ন আচরণ ও মানবিক অপারেশন সহিংসতা প্রতিরোধে ভূমিকা রাখবে।
এজেন্ডা সংকলনঃ
বৈঠকে উল্লেখ হয়েছে, কেন্দ্রে সহিংসতা শুরু হলে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, নিয়ন্ত্রণ এবং পরিস্থিতি দ্রুত স্থিতিশীল করতে এনএসআই, সেনাবাহিনী এবং জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সংযোগ অতি জরুরি। মহড়ায় এসব প্রয়োগ শৃঙ্খলা বা নজরদারিতে জোর দেওয়া হবে।
সেপ্টেম্বর ও নির্বাচনের আগে নির্ধারিত দুই যৌথ মহড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর মধ্যে সক্রিয়তা, সমন্বয় ও দ্রুত পদক্ষেপের সক্ষমতা যাচাই করবে। নির্বাচনী সহিংসতা রোধে এটি কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।