News Link: https://dailylalsobujbd.com/news/2Pa
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার আরশিনগর এলাকায় মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনায় ট্রেনে কাটা পড়ে তিন তরুণ প্রাণ হারিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাত ৮টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজনই একই এলাকার এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন।
নিহতরা হলেন – জোরারগঞ্জ থানাধীন মধ্যম সোনাপাহাড় এলাকার দিদারুল আলমের ছেলে মো. আরাফাত (১৮), আবু তাহেরের ছেলে মো. আনিস (১৮) ও জিয়াউর রহমানের ছেলে মো. রিয়াজ (১৮)। তাদের মৃত্যুতে শুধু পরিবার নয়, পুরো এলাকায় নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। তারা তিনজনই বিএসআরএম এর কর্মরত ছিল বলে জানা যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চার বন্ধু রেললাইনের পাশে হাঁটছিলেন। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী একটি ট্রেন দ্রুতগতিতে এসে পড়লে ফয়সাল (১৭) নামে একজন সরে যেতে পারলেও বাকি তিনজন ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। ফয়সাল জানান, সে পিছন ফিরে দেখে ট্রেন হর্ণ দিচ্ছে, তথন খুব কাছাকাছি সাথে থাকা তিনজনকে তাৎক্ষনিক ডাকলেও ‘আওয়াজ কিংবা ডাক নাশোনায়’ তারা (আরাফাত, আনিস ও রিয়াজ) দূর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রান হারান। এসময় ফয়সাল পানিতে লাফ দিয়ে সরে যেতে সামর্থ হন এবং প্রানে বেচে যান- এভাবে তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান।
দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে মস্তান নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. এরশাদ উল্লাহ তিনজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল হালিম জানান, “আমরা প্রাথমিক তদন্তে জেনেছি, এটি ট্রেন দুর্ঘটনা। নিহতরা হাঁটার সময় অসাবধানতার কারণে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।”
রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) সীতাকুণ্ড এলাকার উপ-পরিদর্শক আশরাফ সিদ্দিক বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। বিস্তারিত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
নিহতদের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাদের জানাজা বৃহস্পতিবার রাতেই অনুষ্ঠিত হয়। এলাকাবাসী, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের উপস্থিতিতে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশে জানাজা সম্পন্ন হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা মি. জাপর জানান, “তিনজনই মধ্যম সোনাপাহাড় গ্রামের ছেলে হলেও তাদের পারিবারিক সমাজ ও কবরস্থান আলাদা হওয়ায় আলাদাভাবে দাফনের প্রস্তুতি চলছে।”
এই হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দেয় রেললাইন পারাপারে সচেতনতার প্রয়োজনীয়তা। তরুণদের সচেতন করতে পরিবার, সমাজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।