News Link: https://dailylalsobujbd.com/news/2KL
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের রংপুরের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে বরিশালে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের সঙ্গে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে গণঅধিকার পরিষদের ১৫ জন ও জাপার অন্তত ৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এ সময় এক যুবককে জাতীয় পার্টির নেতা আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে কেউ আটক নেই।
শনিবার (৩১ মে) বিকেলে নগরীর ফকিরবাড়ি রোডে হামলা-পালটা হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নগরীর ফকিরবাড়ি রোডে জাতীয় পার্টির বরিশাল মহানগর ও জেলা শাখার আয়োজনে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিল শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে উপস্থিত হয় গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। এ সময় জাপার মিছিল থেকে দেওয়া স্লোগানের বিরোধিতা করে তারা বাঁধা দিলে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। কিছুক্ষণ পর জাপা নেতাকর্মীরা সংঘবদ্ধ হলে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় উভয় গ্রুপের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলায় কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়।
এতে গণঅধিকার পরিষদের জেলা সভাপতি শামীম রেজা, সাধারণ সম্পাদক এইচএম হাসান, মহানগর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সোহাগ ফরাজী, কেন্দ্রীয় যুব নেতা মিরাজ খানসহ ১৫ জন আহত হয় বলে জানান সংগঠনের জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল আমিন। এছাড়াও জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম, মহানগর জাপার যুগ্ম আহ্বায়ক আকতার রহমান, জেলা সদস্য সচিব আবদুল জলিল, যুব সংহতির বরিশাল জেলা সভাপতি নজরুল ইসলাম, মহানগর সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও জাপা কর্মী মো. জুম্মান আহত হয় বলে জানান জাপা নেতারা। আহতদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
গণঅধিকার পরিষদের জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল আমিন বলেন, আওয়ামী লীগের দোসর পার্টির মিছিল থেকে উস্কানিমূলক স্লোগান দিতে থাকে। জাতীয় পার্টির ফ্যাসিস্টরা আওয়ামী লীগ হয়েই ফিরে এসেছে। তাদেরকে উস্কানিমূলক স্লোগান দিতে নিষেধ করায় গণঅধিকার পরিষদের জেলা, মহানগর ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপর হামলা চালায় ফ্যাসিস্ট কায়দায়।
তিনি বলেন, অবিলম্বে এ হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি সহ জিএম কাদের ও জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করতে হবে।
জাতীয় পার্টির বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল অভিযোগ করেন, কিছু সন্ত্রাসী পরিকল্পিতভাবে আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে। বিনা উসকানিতে তারা লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নেতাকর্মীদের ওপর চড়াও হয়।
তিনি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলাম। কিন্তু যারা হামলা চালিয়েছে, তারা কারা, কোন দলের তা তদন্ত হওয়া জরুরি। কার উসকানিতে এই সন্ত্রাসীরা সাহস পেল, সেটিও সরকারকে খুঁজে বের করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, নেতাকর্মীরা সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে, একজন হামলাকারীকে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। আমরা কোনো গুজব বা বিশৃঙ্খলার পক্ষে না। তবে এই ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে গণতান্ত্রিক চর্চা বাধাগ্রস্ত করা কখনোই কাম্য নয়।
এ বিষয়ে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান সন্ধ্যায় বলেন, হামলাকারী হিসেবে গণধোলাইয়ের শিকার যুবককে আটক করা হয়নি। এখনো এ ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।