বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে অস্থিরতার পেছনে ভারতের হাত রয়েছে—এমন অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছে নয়াদিল্লি। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) এক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জসওয়াল বলেন, “আমরা এই ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। বাংলাদেশে চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির দায় অন্যের কাঁধে চাপানোর চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।”
সম্প্রতি বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এক বক্তব্যে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বিশেষ করে খাগড়াছড়িতে সৃষ্ট অস্থিরতায় ‘ভারত ও ফ্যাসিস্ট চক্রের ইন্ধন রয়েছে’। এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ভারতীয় মুখপাত্র বলেন, “এ ধরনের মন্তব্য দুঃখজনক এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন। বরং বাংলাদেশের কিছু উগ্রবাদী গোষ্ঠী পাহাড়ি সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে, তাদের ভূমি দখল করছে। এসব ঘটনা বাংলাদেশ সরকারকে গুরুত্বসহকারে তদন্ত করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি ঢাকার প্রতি আহ্বান জানাব—নিজেদের ভেতরের সমস্যাগুলোর সমাধান খোঁজার চেষ্টা করুন এবং পাহাড়ি অঞ্চলের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার আগে নিজেদের আত্মদর্শন প্রয়োজন।”
প্রসঙ্গত, ছাত্র ও সাধারণ জনতার টানা গণআন্দোলনের মুখে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যান। তিনি বর্তমানে সেখানেই অবস্থান করছেন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দাবি করে আসছে, শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চক্রান্ত করছেন। এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্যে ভারত ও ‘পতিত স্বৈরাচার’ মিলে খাগড়াছড়িতে নতুন করে অশান্তির পরিকল্পনার অভিযোগ তোলা হয়।
তবে আজ ভারত সরাসরি এই অভিযোগ অস্বীকার করল এবং পাল্টা অভিযোগ করল—বাংলাদেশের ভেতরে সংখ্যালঘুদের অধিকার হরণ ও নিরাপত্তাহীনতাই বর্তমান অস্থিরতার মূল কারণ।